পশ্চিম মেদিনীপুরে মাথায় হাত চাষিদের
ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি ১৬৬৩ = কোটি টাকার ফসলের
![]() |
bikramtechnology.org |
মেদিনীপুর: কালবৈশাখীর দাপটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। বােরাে সহ বিভিন্ন চাষে প্রায় ১৬৬৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে শুধু বােরাে চাষেই প্রায় সাড়ে ১৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর উপর আবহাওয়া দপ্তরের আগামী দু’দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাস চাষিদের রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কী করে তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। এমনিতেই লকডাউনের জেরে জেলার। সর্বত্র খেতমজুরের আকাল চলছে৷ ফলে, চাষিরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ১০০ দিনের প্রকল্পে ধান কাটার কাজকে যুক্ত করা হলে কিছুটা লাভ হবে। | জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা(তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী। বলেন, কয়েক দিনের ঝড়বৃষ্টির পর এখনও বহু জমিতে জল জমে রয়েছে। অনেক জমিতে ধানে কল হয়ে গিয়েছে। চাষিরা। এই অবস্থায় জমি থেকে ধান কাটতে পারছেন না। আরও ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে৷ ফলে, ক্ষতির আশঙ্কা এখনও রয়েছে। | জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আমরা রাজ্য সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছি। জেলার বহু চাষির কৃষিবিমা করা নেই। আশা করি, তাঁদের বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হবে। | কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গােটা জেলায় ২ লক্ষ ৩৪২৭ হেক্টর জমিতে এবার বােরাে চাষ হয়েছে। গত কয়েক দিনের কালবৈশাখীর দাপটে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩৮৪ হেক্টর | জমির বােরাে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ | ১৪৫১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। বােরাে ধানের পরই রয়েছে। | সজি। তাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৯৩ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার। | তিল চাষে ক্ষতির পরিমাণ ৮২ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। বাদাম | চাষে ২১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলার সব
জায়গায় পান চাষ হয় না। সবং সহ কয়েকটি ব্লকে ভালাে পান চাষ হয়। পান চাষেও ঝড়বৃষ্টিতে ৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাটচাষে ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। জেলার ডেবরা, সদর ব্লক সহ কয়েকটি জায়গায় নানা ধরনের ফুলের চাষ হয়। ঝড়বৃষ্টির হাত থেকে ফুল চাষও রক্ষা। | পায়নি। প্রায় ৪ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার ফুলগাছ নষ্ট হয়েছে। ত জেলার বেশকিছু জায়গায় তরমুজ চাষ হয়েছিল। তাতে ক্ষতি, হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকার। ঘাটাল ব্লকের গােপমহল গ্রামের বােরাে চাষি জগবন্ধু মাজি বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে
এবার বােরাে ধান চাষ করেছি। গত সােমবার থেকে বৃষ্টি শুরু | হয়েছে। রােজই বৃষ্টি হচ্ছে। তার জেরে জমিতে জল দাড়িয়ে। গিয়েছে। বহু ধান শুয়ে পড়েছে। লকডাউনের জেরে বাইরের
দিনমজুর এবার নেই। স্থানীয় শ্রমিকরা ৪০০-৪৫০ টাকা করে মজুরি চাইছে। তা দিতে হলে ধান কাটতেই সব টাকা চলে | যাবে। আবার মেশিনে ধান কাটলে বহু ধান নষ্ট হয়ে যাবে। | জমিরও ক্ষতি হবে। এখনও জমিতে ধান পড়ে রয়েছে। ফের | বৃষ্টি হবে বলে শুনছি। ফলন কমে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, বুঝতে পারছি না। সরকার চাষিদের দিকে একটু নজর দিক।
| বলেন, আমি এবার সাত বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছি। | ঝড়-বৃষ্টির জেরে বহু গাছ জমিতে পড়ে গিয়েছে। তিল কতটা | ঘরে তুলতে পারব, বুঝতে পারছি না। খরচটুকুও এবার উঠবে | না বলে মনে হচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে না | দাঁড়ালে আর চাষ করা যাবে না।