লকডাউন সামলাতে ব্যস্ত পুলিসকর্মীরা, রেডজোনে সুযােগ বুঝে দাপাচ্ছে চোররা
তমলুক: রেডজোন পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় লকডাউন কার্যকর করতে পুলিসের ব্যস্ততার সুযােগে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চোরের দল। তমলুক থেকে হলদিয়া, খেজুরি থেকে কাঁথি, সর্বত্র চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলাবাসী। লকডাউনে। এমনিতে রাস্তাঘাটে লােকজন কম। সন্ধ্যার পর শুনশান শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র। সেই সুযােগে করােনা আতঙ্ক সরিয়ে চুরি করতে নেমে পড়েছে দুষ্কৃতীরা। বেশিরভাগ ঘটনার কিনারা করতে পারেনি পুলিস। এমনিতেই লকডাউন কার্যকর করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তার উপর চোরেরা দাপাদাপি করায় বিপাকে পড়েছে পুলিস। | মঙ্গলবার রাতে হলদিয়ার ভবানীপুর থানার ব্রজলালচকে নীচবাজার এলাকায়। শ্রীকান্ত দাস নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানে ডাল, ভােজ্যতেল, বিস্কুট, সয়াবিন, শ্যাম্পু সহ অত্যাবশ্যকীয় নানা পণ্যসামগ্রী চুরি হয়ে যায়। দোকানের শাটার ভেঙে ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেয় চোর। বুধবার সকালে নিজের দোকানে এসে মাথায় হাত শ্রীকান্তবাবুর। এদিকে চুরি যাওয়া জিনিসপত্র হলদিয়ার দুর্গাচক এলাকায় বিক্রি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে চোর বাবাজি। হলদিয়ার বাড়বাজিতপুর এলাকার ওই বাসিন্দাকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
তমলুক শহরে পদুমবসান এলাকায় হলদিয়ামেচেদা সড়কের ধারে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা চিত্ত মাইতির একটি বিল্ডিং রয়েছে। মূলত বাণিজ্যিক সংস্থাকে ভাড়া দেওয়ার লক্ষ্যে চিত্তবাবু ওই বিল্ডিং বানিয়েছেন। সেখানে দুটি পাম্প বসানাে ছিল। দিন কয়েক আগে একটি পাম্প চুরি করে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। অত্যন্ত জনবহুল ওই এলাকা এই মুহূর্তে সন্ধ্যার পর শুনশান হয়ে। যাচ্ছে। লকডাউনে মানুষজন ঘরবন্দি। সেই সযােগে ওই তৃণমূল নেতা তথা আইনজীবী চিত্তবাবর বিল্ডিং থেকে পাম্প হাতিয়েছে চোর।
তিনি বলেন, ১০ হাজার টাকার পাম্প চুরি গিয়েছে। | গত ১৯ এপ্রিল কাঁথি শহরে স্কুলবাজার এলাকায় টোটো থেকে নেমে বাজারে। ঢােকার মুখে এক মহিলার গলা থেকে সােনার চেন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুই দুষ্কৃতী। দুই ছিনতাইবাজ পরিকল্পনা করেই ওই অপারেশন সারে। মহিলা ২ | টোটো থেকে নেমে হেটে বাজারে ঢােকার মুখে একজন হ্যাচকা মেরে সােনার হার টেনে নেয়। কাছেই বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিল অন্যজন। মুহূর্তে এলাকা থেকে চম্পট দেয় দু’জন। কাঁথি থানায় এনিয়ে অভিযােগ জানিয়েছেন ওই মহিলা।।
তার আগে ১৭ এপ্রিল খেজুরি-১ ব্লকের কামারদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমজাদনগর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা আসবাবপত্র, সিলিং ফ্যান ও স্ট্যান্ড ফ্যান নিয়ে চম্পট দিয়েছে। আলমারি ভেঙে দুষ্কৃতীরা জিনিসপত্র এলােমেলাে
করে দিয়েছে। সম্ভবত নগদ টাকার খােজে তারা আলমারি খুলেছিল৷ কিন্তু, সেসব কিছু ছিল না। আমজাদনগর প্রাইমারি স্কুলের একটি ঘরে দীর্ঘদিন ধরে ওই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে। সেখানেই চুরি হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ছিচকে চুরির ঘটনাও ঘটছে। লকডাউনের বিভিন্ন বাজার এলাকায় লােকজন বেশ কম। পুলিসের ভয়ে সন্ধ্যার পর চায়ের আড্ডা ভুলতে হয়েছে। তাছাড়া সন্ধ্যাবেলার আচ্ছা রুখতে পুলিস কোথাও দোকান থেকে চায়ের কেটলি নিয়ে চলে যাচ্ছে, আবার কোথাও দুধ ফেলে দিচ্ছে। এই অবস্থায় সন্ধ্যার পর শুনশান। হয়ে যাচ্ছে ‘রেড জোন’ পূর্ব মেদিনীপুর। আর সেই সুযােগেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চোরের দল। হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার পার্থ ঘােষ বলেন, মঙ্গলবার রাতে ব্রজলালচকে একটি চুরির ঘটনা। ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।