সুশান্ত মামলা
সিবিআই হাতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
নয়াদিল্লি: খুন না আত্মহত্যা? ঠিক কী কারণে মৃত্য হয়েছিল অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের। এই রহস্যের তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই। বুধবার এই সংক্রান্ত একটি মামলার চূড়ান্ত রায়ে এই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আর এই রায়ে জোর ধাক্কা খেল মহারাষ্ট্র সরকার। কারণ, সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠলেও তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার বিরােধিতায় অনড় ছিল। তারা। এছাড়া, উদ্ধব থ্যাকারের প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বারবার বিহার সরকারের। তদন্তের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তােলা হয়েছে। কিন্তু এদিন শীর্ষ আদালতের রায়ে মহারাষ্ট্র সরকারের কোনও বাধাই ধােপে টিকল না। বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের। বেঞ্চ ৩৫ পাতার রায়ে জানিয়েছে, সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর বাবা পাটনায় যে অভিযােগ দায়ের করেছিলেন, তা সম্পূর্ণ বৈধ। বিহার সরকার সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করতেই পারে। মুম্বই পুলিসকে এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী | সংস্থার হতে তুলে দিতে হবে। সুশান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত নতুন কোনও মামলা দায়ের হলে তারও তদন্ত করবে সিবিআই।
এদিন রায়ের পরই তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সুশান্তের অটন্সি রিপাের্ট, ঘটনাস্থলের ছবি মুম্বই পুলিসের কাছ থেকে চেয়ে পাঠানাে হয়েছে। উল্লেখ্য, সুশান্ত-মৃত্যুর তদন্তে আগেই সিট গঠন করেছে সিবিআই। দায়িত্বে রয়েছেন আইপিএস মনােজ শ্রীধর। দলে রয়েছেন ডিআইজি গগনদীপ এবং ইনভেস্টিগেটিং অফিসার অনিল যাদব। যাঁরা এর আগে বিজয় মালিয়া মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। সিবিআই সূত্রের খবর, দ্রুত মুম্বইতে গিয়ে তদন্তের জন্য বৃহন্মুম্বই পুরসভার কমিশনার ইকবাল সিং চাহালের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইকবাল জানিয়েছেন, সিবিআই টিম যদি সাতদিনের জন্য মুম্বই আসে এবং কনফামড় রিটার্ন টিকিট থাকে, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। সফর | সাতদিনের বেশি হলে আমাদের কাছে ইমেলে আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে
আমরা তাঁদের ছাড় দেব। অন্যদিকে, সুশান্তের টাকা নয়ছয়ের মামলায় এদিন | পরিচালক রুমি জাফরিকে সমন পাঠায় ইডি। উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে সুশান্তের দেহ উদ্ধার হয়। দিন কয়েক পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়। তবে একাংশের দাবি, প্রথম থেকেই মহারাষ্ট্র পুলিস আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা করছে। কিন্তু, পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং প্রমাণ | অন্য কথা বলছে। অভিনেতার বাবা কে কে সিং পাটনায় অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করে। বিহার প্রশাসনও। এফআইআর বিহার থেকে মুম্বইয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আর্জি
জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রিয়া। মুম্বইয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বাধা পেয়ে | কেন্দ্রের কাছে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করে বিহার সরকার। যা নিয়ে দুই রাজ্যের। সরকারের মধ্যে টানাপােড়েন শুরু হয়। শুরু হয় রাজনৈতিক তরজাও।
এদিন শীর্ষ আদালত সিবিআই তদন্তে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পর জানিয়েছে, মুম্বই চলচ্চিত্র জগতের একজন প্রতিভাবান অভিনেতা ছিলেন সুশান্ত। কিন্তু, অভিনয় ক্ষমতার সম্পূর্ণ পরিচয় দেওয়ার তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অভিনেতার পরিবার, বন্ধু এবং ভক্তরা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে আগ্রহী। তারা তদন্ত শেষ হওয়ার অপেক্ষা করছেন। তাই এই ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এখন সময়ের দাবি।।