পূর্ব মেদিনীপুরে করােনার শিকার আরও ১১৪ জন ।
আক্রান্ত কাঁথির বেসরকারি ব্যাঙ্কের ৮ কর্মী
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নতুন করে করােনা আক্রান্ত হলেন ১১৪জন। মঙ্গলবার রাতে চণ্ডীপুর এবং বুধবার সকালে পাঁশকুড়া কোভিড় হাসপাতালে দু’জন আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। করােনায় আক্রান্ত দেহ তমলুক শহরে ইলেক্ট্রিক চুল্লিতে দাহ করা হচ্ছে কিন্তু, দু’তিনদিন সেই চুল্লি বিকল হওয়ায় ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়েছে। চণ্ডীপুরে কোভিড হাসপাতালে মৃত করােন আক্রান্তের বাড়ি কাঁথি-৩ব্লকে লাউদা গ্রাম পঞ্চায়েতের নীলপুর এলাকায়। বুধবার পঞ্চায়েত সমিতি এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাঁর দেহ সৎকারের জন্য নীলপুর ও কুসুমপুর সীমানা লাগােয়া ক্যানেলপাড় এলাকা ভিজিটে গিয়েছিলেন। সেই সময় এলাকার লােকজন ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন সকলে। আপাতত দেহ চণ্ডীপুর কোভিড হাসপাতালে রয়েছে৷
পাঁশকুড়া কোভিড হাসপাতালেও আক্রান্ত এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি সুতাহাটার বাসুলিয়া এলাকায়। ওই এলাকাটি হলদিয়া পুরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। এদিন পুরসভার পক্ষ থেকে দেহ আনতে গাড়ি পাঠানাে হয়। পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে।
কাঁথি শহরে সরস্বতীতলা এলাকার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ১৪জন কর্মী করােনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আপাতত ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১সেপ্টেম্বর ব্যাঙ্ক খােলার কথা। ওই ব্যাঙ্কের লােন ডিভিশনে ১১২জন কাজ করেন। ওই ডিভিশনের কর্মরত স্টাফদের বেশ কয়েজন আক্রান্ত। এখনও অনেকের রিপাের্ট আসেনি। অফিসার সহ অন্যান্য আরও কয়েকজন অসুস্থ রয়েছেন। ওই ব্যাঙ্কে যেসকল গ্রাহক যাতায়াত করেছেন, তাঁরা চরম আতঙ্কে ভুগছেন।
তমলুক পুরসভার ৬ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মােট তিনজন আক্রান্ত। তমলুক শহরে মােট আক্রান্তের সংখ্যা ১১৬৷ সংক্রমণের গতি বাড়তে থাকায় পুরসভা কর্তৃপক্ষ আগামী শুক্রবার অফিসের গেটে স্যানিটাইজার টানেল বসানাের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি করােনা
সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে পাঁশকুড়া ও সুতাহাটা থানা এলাকায়। সুতাহাটার শ্রীকৃষ্ণপুর, বরদা, জামালচক, নন্দীগ্রাম-২ব্লকের বয়াল-১গ্রাম পঞ্চায়েত, বিরুলিয়া পঞ্চায়েত, খেজুরির হেড়িয়া, নন্দীগ্রামের কাণ্ডপসরা, চণ্ডীপুরের ধরণীধরচক, তমলুকের রাজনগর, পাঁশকুড়ার বাহারগ্রাম, পূর্ব শুকটিয়া, হাতিশাল, কনকপুর, নারান্দা, দক্ষিণ গােপালপুর এবং দেশপ্রাণ ব্লকের বসন্তিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় করােনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মােট আক্রান্তের সংখ্যা ৫২০৯জন। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৩৮০০জন। বুধবার পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ১৫জন বাড়ি ফিরলেন। তাঁদের মধ্যে তমলুকের চারজন, হলদিয়া ও কোলাঘাটের তিনজন করে, মহিষাদল ও পাঁশকুড়ার দু’জন করে এবং এগরার একজন।
এদিন ওই হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১২জন। জেলায় উপসর্গহীন করােনা আক্রান্তদের হােম আইসােলেশন রাখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় প্রায় এক হাজার আক্রান্তকে হােম আইসােলেশনে রাখা হয়েছে। তিনশাের বেশি সুস্থ হয়েছেন। | বুধবার সিপিএমের যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ, কোলাঘাটের বিএমওএইচের কাছে করােনা চিকিৎসা নিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। কোলাঘাটে সেফ হােম চালু করা এবং জনবহুল এলাকাকে। স্যানিটাইজ করার দাবিতে স্থানীয় বিধায়ক ইব্রাহিম আলির নেতৃত্বে ডেপুটেশন কর্মসূচি ছিল। যুব সংগঠনের নন্দীগ্রাম১লােকাল কমিটির উদ্যোগে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ এবং বিএমওএইচের কাছেও ডেপুটেশন দেওয়া হয়।