টানা ৮ মাস বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
নন্দকুমারে স্কুলের মধ্যেই মুরগি চাষ, ব্যাপক বিক্ষোভ
তমলুক: লকডাউনে টানা আট মাস বন্ধ স্কুল-কলেজ৷ শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থী, প্রত্যেকেই বাড়িবন্দি। দীর্ঘ আট মাস শুনশান স্কুল৷ এই সুযােগে নন্দকুমার থানার দক্ষিণ হাটগেছিয়া পাণ্ডববসান কানাইলাল বিদ্যামন্দিরে(উচ্চ মাধ্যমিক) মুরগি চাষ শুরু করেছিলেন স্কুলেরই অবসরপ্রাপ্ত এক অশিক্ষক কর্মী। স্কুলে বেঞ্চ, চেয়ার টেবিল ওলট-পালট করে মেঝের উপর কাঠের গুড়াে ছড়িয়ে রীতিমতাে পােল্টি ব্যবসা শুরু করায় বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। স্কুলের বিদ্যুৎ, জল ব্যবহার করে প্রাক্তন অশিক্ষক কর্মী নারায়ণচন্দ্র জানী সেখানে দেশি এবং ব্রয়লার মুরগি পালন শুরু করে দিয়েছিলেন। এদিন সকালে স্কুল প্রাঙ্গণে মদের
বােতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল। মুরগি দেখভালের দায়িত্বে থাকা লােকজন মদ খেয়ে বােতল ছুঁড়ে ফেলেছে বলে স্থানীয়দের অভিযােগ। অবিলম্বে স্কুল থেকে পােস্ট্রির পাততাড়ি গােটানাের দাবিতে বিক্ষোভ চলে। খবর পেয়ে স্কুলে যান স্থানীয় চক শিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনােজকুমার আদক। প্রধান শিক্ষক অমিত মহাপাত্রও সন্ধ্যা নাগাদ স্কুলে যান। প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউন শুরুর সময় থেকে স্কুল বন্ধ। এক বছর আগে ওই স্কুল থেকে অবসর নিয়েছেন নারায়ণবাব।কিন্তু, প্রধান শিক্ষক ভরসা করে তার জিম্মাতেই চাবি রাখেন। সেই সুযােগ নিয়ে দিন কয়েক আগে শ্রেণীকক্ষের ভিতর পােস্ট্রি ব্যবসা শুরু করে ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। মুরগির খাবার ভর্তি বস্তা থেকে জলের জ্যারিকেন, বেশকিছু বাঁশের ঝুড়ি সহ প্রয়ােজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বাইরে থেকে দরজা ও জানালা বন্ধ করে দিব্যি পােস্ট্রির - কারবার চলছিল। কিন্তু, বন্ধ স্কুলঘরে রাতের বেলায় আলাে " দেখে বেশ কয়েকজনের সন্দেহ হয়। ভিতরে কোনও
জানালার ওপাশে ক্লাসরুমের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশি ও | ব্রয়লার মুরগি। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গ্রামে। শােরগােল পড়ে যায়। | খবর পেয়ে দক্ষিণ দামােদরপুর, দক্ষিণ হাটগেছিয়া এবং | পাণ্ডববসান গ্রাম থেকে ৫০জনের বেশি জড়াে হন। তারা স্কুলে বিক্ষোভ দেখান। লকডাউনে বন্ধ স্কুলঘরে মুরগি পালন অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা বলে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দেন। এনিয়ে
উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় গ্রাম " পঞ্চায়েত প্রধান। এরপর নারায়ণবাবুকে স্কুলে ডেকে পাঠানাে " হয়। তিনি নিজে মুরগি রাখার কথা স্বীকার করেন।। | অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষাকর্মী বলেন, আমার পাঁচ মেয়ে। " ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উপলক্ষে খাওয়া-দাওয়ার কর্মসূচি ছিল। কিন্তু, " এক মেয়ের বাড়িতে কার্তিক ঠাকুর রেখে দেওয়ার জন্য " খাওয়া দাওয়া আটকে গিয়েছে। তাই মুরগি স্কুলে রাখা
« স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, একসঙ্গে ১০টির " বেশি মুরগি খাওয়ার জন্য আনা হয় না। এখানে মুরগি পালন
করা হচ্ছিল। রাতের অন্ধকারে মুরগি এবং খাবারদাবার এনে এখানে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লােকজন কেউ এব্যাপারে টের পাননি। দরজা জানালা বন্ধ করেই চলছিল মুরগি পালন। স্কুলের বিদ্যুৎ, জলও ব্যবহার করা হচ্ছিল। মুরগি রেখে একাধিক শ্রেণীকক্ষ নােংরা করে দেওয়া হয়েছে। এটা একেবারে নিম্ন মানসিকতার কাজ। কোনওভাবেই এই কাজ - সমর্থনযােগ্য নয়।