উচ্চ মাধ্যমিকের সাড়ে ন’লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব
এই পরিস্থিতিতে ফের পরীক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফোটালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনলাইনে পড়াশােনার সুবিধার জন্য রাজ্যের প্রত্যেক দ্বাদশ শ্রেণীর পড়য়াকে সরকার থেকে দেওয়া হবে ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব। বৃহস্পতিবার নবান্নে একথা ঘােষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। খুব শীঘ্রই স্কুল এবং মাদ্রাসার সাড়ে ৯ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর হাতে এই ট্যাব তলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি অনলাইন ক্লাস করার জন্য স্কুলগুলিকেও একটি করে কম্পিউটার দেবে সরকার। তবে আপাতত যে সব স্কুলে কম্পিউটার নেই, সেগুলিই এই তালিকায় আসবে। | মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা জুন মাসে আয়ােজন করা নিয়ে আলােচনা চলছে। এর মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়য়ারা যাতে পড়াশুনাে চালিয়ে যেতে পারে, তার জন্য প্রত্যেককে একটি করেট্যাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এখন অনেকের কাছে স্মার্টফোন না থাকায় পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছে। ট্যাবের মাধ্যমে বারাে ক্লাসের ছেলেমেয়েরা অন্তত পড়াটা ফলাে করতে পারবে। রাজ্যের ১৪ হাজার উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল এবং ৬৩৬টি মাদ্রাসার পড়য়াদের ট্যাব দেওয়ার জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। একই পদ্ধতিতে কম্পিউটার কিনবে সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘােষণায় স্বভাবতই খুশি পড়য়া, অভিভাবক এবং শিক্ষক মহল। দেশ তথারাজ্যে প্রয়ােজনের তুলনায় স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার বাট্যাবের সংখ্যা অনেকটাই কম। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। তা ছাড়া এসব বৈদ্যুতিন গ্যাজেট কেনার মতাে আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় অনলাইন ক্লাসে যােগ দিতেও পারছিল না বহু ছাত্রছাত্রী। ফলে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পড়য়াদের থেকে তারা পিছিয়ে পড়ছিল। যা একেবারেই অনভিপ্রেত। করােনার জেরে কবে থেকে স্কুল খােলা সম্ভব হবে, তা এখনই বলতে পারছে না রাজ্য সরকার। তাই মাঝামাঝি একটা বন্দোবস্ত প্রয়ােজন হয়ে পড়ছিল। তার জেরেই এদিনের সিদ্ধান্ত। সরকারের আর্থিক সঙ্কট সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী যে এই সমাধানের কথা ভেবেছেন, এর উন্য তাকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সম্প্রতি প্রাক্তনী ও অধ্যাপকদের আর্থিক সহায়তায় কয়েকশাে দুঃস্থ পড়য়াকে স্মার্টফোন দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। দিল্লিতে ১৫ হাজার এবং উত্তরপ্রদেশে দেড় লক্ষের কিছু বেশি ছাত্রছাত্রীর হাতে ট্যাব তুলে দিয়েছে সরকার। কিন্তু সাড়ে ৯ লক্ষ পরীক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে তা তুলে দেওয়ার মতাে বিরাট প্রকল্প আর কোনও রাজ্য সরকার নেয়নি। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখােপাধ্যায় বলেন, স্মার্টফোন বা ট্যাবের অভাবে পড়য়াদের কেমন সমস্যা হচ্ছিল, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী যে পদক্ষেপ নিলেন, তাতে তাঁর জনদরদী মুখ ফের সামনে এল।